হুজূর আকরাম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্বয়ং তাঁর মৃত উম্মতের পক্ষ থেকে কোরবানি করেছেন। তাই এটা তার জন্য সৌভাগ্যের বিষয় হবে যার পক্ষে সম্ভব হুজূরে করীমের জন্য কোরবানি করা। -[বাহারে শরীয়ত]
গরু, উট দ্বারা কোরবানী করলে নফল হিসেবে একভাগ প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)’র জন্যে কোরবানি দেয়া অনেক উত্তম।
কোরবানির পশুর বয়স :
কোরবানির ছাগল কমপক্ষে একবছর, গরু দুই বছর এবং উট পাঁচ বছর হতে হবে। কোরবানির জন্য সুন্দর ও নিখুঁত পশু বাছাই করা উত্তম। যেসব পশু অন্ধ, খোঁড়া এবং জবেহ করার স্থানে যেতে অক্ষম, লেজ, শিং কিংবা কান কাটা বা ভাঙ্গা বা দুর্বল ইত্যাদি কোরবানীর পশু কোরবানির উপযুক্ত নয়।
কোরবানির মাংস ও ভাগের শরিয়তসম্মত নিয়ম:
কোরবানির মাংস তিনভাগে ভাগ করে এর একভাগ গরীব ও ইয়াতিম-মিসকিনদের দান করা, একভাগ আত্মীয়-স্বজনকে দেয়া এবং অন্য ভাগ নিজে রাখা মুস্তাহাব। তবে ইচ্ছা করলে আপনি পুরো মাংসই খেতে পারেন এতে দোষের কিছু হবেনা। কোরবানির পশু যবেহকারী ও মাংস প্রস্তুতকারীকে কোরবানির পশুর মাংস থেকে পারিশ্রমিক স্বরূপ দেয়া যাবে না।
চামড়া: কোরবানির পশুর চামড়া, রশি ও ফুলের মালা প্রভৃতি সদকা করে দিতে হবে। চামড়া নিজের ব্যবহারের জন্য রাখতে চাইলে রাখতে পারবে, যেমন- জায়নামায, বিছানা, ইত্যাদি বানাতে পারবে। কিন্তু কোরবানির চামড়া বিক্রি করে এর মূল্য নিজ কর্মে ব্যয় করতে পারবে না।
মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানি:
যদি মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানি দেয়া হয়, তাহলে মাংস উপরোল্লিখিত নিয়মে বন্টন করা উত্তম।
কোরবানির পশু জবেহ করার নিয়ম:
জবেহ করার নিয়ম জানা থাকলে কোরবানির পশু নিজ হাতে জবেহ করা মুস্তাহাব। যদি নিজে করতে না পারেন তাহলে অন্যের দ্বারা তা সমাধা করা যাবে। তবে জবেহ্’র সময় নিজে সামনে থাকা উত্তম। জবেহ্’র সময় নিম্ন লিখিত রগসমূহ কাটার ব্যাপারে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবেঃ
(ক) শ্বাসনালী (খ) খাদ্যনালী এবং (গ) রক্ত চলাচলের নালীদ্বয়।
অনেকেই কোরবানি নিয়ম ও পদ্ধতি জটিল ভাবলেও আদতে তা একেবারেই সহজ। নিম্নোক্ত নিয়ম মানলেই সহীহ শুদ্ধভাবে কোরবানি আদায় হয়ে যাবে:
- জবাই করার সময় পশুকে কিবলামু্খী করে শুইয়ে "বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার" বলে জবাই করা। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে যেন পশু জবাই না করা হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।
- জবাই করার সময়ে পশুর কণ্ঠনালী, খাদ্যনালী এবং উভয় পাশের দুটি রগ অর্থাৎ মোট চারটি রগ কাটতে হবে।
- ধারালো ছুরি দিয়ে পশু জবাই করতে হবে যেন জবাইয়ের সময় পশুর কষ্ট না হয়। হাদিসে রয়েছে- "রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'পশু জবাই করার আগে ছুরি-চাকুতে ভালোভাবে ধার দিয়ে নেওয়া।" (মুসলিম)
- অন্য পশুর সামনে জবাই না করা এবং পশুর সামনে ছুরি-চাকু বা অন্য অস্ত্রে ধার না দেয়া। কারণ এতে পশু ভয় পেয়ে যায়, যা পশুকে কষ্ট দেয়ার সমতুল্য।
বক্ষস্থল হতে গলদেশের মধ্যবর্তী কোন স্থানে জবেহ করা বাঞ্চনীয়। জবেহ’র পূর্বে ছুরি খুব ধারালো করে নিতে হবে। তারপর কোরবানির পশুর মাথা দক্ষিণ এবং পেছনের দিক উত্তর দিকে রেখে কেবলামুখী করে শায়িত করে দোয়া পড়বেন।
কোরবানির দোয়া: “ইন্নী ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহিয়া লিল্লাজি ফাত্বারাস সামাওয়াতী ওয়াল আরদা হানীফাঁও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন, ইন্না সালাতী ওয়ানুসুকী ওয়া মাহ্য়ায়া ওয়ামামা-তী লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়ালাকা বিস্মিল্লাহি আল্লাহু আকবর” বলে কোরবানির পশু জবেহ করার পর পাঠ করবেন- “আল্লাহুম্মা তাক্বাব্বাল মিন্নী (অংশীদার থাকলে- ‘ওয়া মিন’ বলার পর প্রত্যেকের নাম ও বাপের নাম বলবেন) কামা তাক্বাব্বালতা মিন খলীলিকা ইব্রাহীমা আলাইহিস্ সালাম ওয়া হাবীবিকা মুহাম্মদিনিল্ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।”
কেউ এ দোয়াটি না পারলে ছোট্ট এ অংশটুকু পড়তে পারে- বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়া লাকা।
কোরবানি দিবসে করণীয়:
হাদীস শরীফ: হুজূর আক্বদাস (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদুল ফিত্বরের দিন মিষ্টি জাতীয় কিছু আহার করে ঈদগাহে তাশরিফ নিয়ে যেতেন, কিন্তু ঈদুল আযহার দিবসে নামায আদায় না করা পর্যন্ত কিছুই আহার করতেন না। -[তিরমিজী, দারেমী ও ইবনে মাজাহ]
আকিকা:
অনেককেই কোরবানির সাথে আকিকাও আদায় করতে দেখা যায়। আকিকা ছেলে সন্তান হলে কোরবানির পশুতে দুই অংশ আর মেয়ে সন্তান হলে এক অংশ। আকিকার অংশ পিতা-মাতা, দাদা-দাদী সবাই খেতে পারবে; কোন অসুবিধে নেই। আকিকার চামড়ার হুকূম কোরবানির চামড়ার হুকুমের আওতায় পড়বে।
আল্লাহ তায়লা হযরত ইব্রাহীম আঃ এর খাতিরে আমাদের কোরবানী কবুল করুন। কোরবানীর নিয়ম মেনে সবাইকে আল্লাহর রাস্তায় কোরবানী দেওয়ার তৌফিক দান করুন।আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ইসলামের সকল নিয়ম কানুন মেনে চলার তৌফিক দান করুন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
যাদের ওপর কুরবানি ওয়াজিব:
কুরবানি আল্লাহর প্রেমের নির্দশন। যুগে যুগে আল্লাহ প্রত্যেক আম্বিয়া কেরামগণের ওপরেই এই দায়িত্ব ন্যস্ত করেছেন। যার ধারাবাহিকতা এখনও প্রবাহমান। আল্লাহ সামর্থ্যবান মুসলমান আকিল, বালিগ, মুকিম পুরুষ ও নারীর ওপর কুরবানি করাকে ওয়াজিব করেছেন।যাদের ওপর কুরবানি ওয়াজিব তা তুলে ধরা হলো-
যারা কুরবানি করবেন-
১. কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য নেসাব পরিমাণ মাল পূর্ণ এক বছর থাকা জরুরি নয়। অর্থাৎ যে ব্যক্তি ১০ জিলহজ ফজর হতে ১২ জিলহজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকবে, তার ওপর কুরবানি ওয়াজিব।
২. পারিবারিক ব্যয় নির্বাহের জন্য যে পরিমাণ জমি বা ফসলের দরকার তা থেকে অতিরিক্ত জমি বা ফসলের মূল্য অথবা যে কোনো একটির মূল্য যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মূল্যের সমান হয়। তাহলেও কুরবানি ওয়াজিব।
৩. পরিবারের সব সদস্যের যদি আলাদা-আলাদাভাবে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়, তবে সবার ওপর আলাদাভাবেই কুরবানি ওয়াজিব।
৪. গরিব ব্যক্তি যদি কুরবানির নিয়্যাতে গরুক ক্রয় করে তবে তার ওপরও কুরবানি ওয়াজিব।
৫. উদ্দেশ্য হাসিলে কুরবানির মান্নত করলে সে উদ্দেশ্য পূর্ণ হলেও কুরবানি করা ওয়াজিব।
৬. নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যত সম্পদের অধিকারী হোক না কেন তার ওপর একটি কুরবানিই ওয়াজিব। সম্পদ বেশি বলে একাধিক কুরবানি করতে হবে এমন কোনো বিধান নেই। অবশ্য একাধিক কুরবানি করলে অনেক ছাওয়াব লাভ হয়।
এক কথায় যে অবস্থায়, যার ওপর সাদাকায়ে ফিতর ওয়াজিব, সে অবস্থায় ঐ ব্যক্তির ওপর কুরবানিও ওয়াজিব। অতএব প্রত্যেক স্বাধীন, ধনী, প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্ক নর-নারীর উপর কুরবানি ওয়াজিব।
কোরবানি দিবসে করণীয়:
হাদীস শরীফ: হুজূর আক্বদাস (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদুল ফিত্বরের দিন মিষ্টি জাতীয় কিছু আহার করে ঈদগাহে তাশরিফ নিয়ে যেতেন, কিন্তু ঈদুল আযহার দিবসে নামায আদায় না করা পর্যন্ত কিছুই আহার করতেন না। -[তিরমিজী, দারেমী ও ইবনে মাজাহ]
আকিকা:
অনেককেই কোরবানির সাথে আকিকাও আদায় করতে দেখা যায়। আকিকা ছেলে সন্তান হলে কোরবানির পশুতে দুই অংশ আর মেয়ে সন্তান হলে এক অংশ। আকিকার অংশ পিতা-মাতা, দাদা-দাদী সবাই খেতে পারবে; কোন অসুবিধে নেই। আকিকার চামড়ার হুকূম কোরবানির চামড়ার হুকুমের আওতায় পড়বে।
আল্লাহ তায়লা হযরত ইব্রাহীম আঃ এর খাতিরে আমাদের কোরবানী কবুল করুন। কোরবানীর নিয়ম মেনে সবাইকে আল্লাহর রাস্তায় কোরবানী দেওয়ার তৌফিক দান করুন।আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ইসলামের সকল নিয়ম কানুন মেনে চলার তৌফিক দান করুন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
যাদের ওপর কুরবানি ওয়াজিব:
কুরবানি আল্লাহর প্রেমের নির্দশন। যুগে যুগে আল্লাহ প্রত্যেক আম্বিয়া কেরামগণের ওপরেই এই দায়িত্ব ন্যস্ত করেছেন। যার ধারাবাহিকতা এখনও প্রবাহমান। আল্লাহ সামর্থ্যবান মুসলমান আকিল, বালিগ, মুকিম পুরুষ ও নারীর ওপর কুরবানি করাকে ওয়াজিব করেছেন।যাদের ওপর কুরবানি ওয়াজিব তা তুলে ধরা হলো-
যারা কুরবানি করবেন-
১. কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য নেসাব পরিমাণ মাল পূর্ণ এক বছর থাকা জরুরি নয়। অর্থাৎ যে ব্যক্তি ১০ জিলহজ ফজর হতে ১২ জিলহজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকবে, তার ওপর কুরবানি ওয়াজিব।
২. পারিবারিক ব্যয় নির্বাহের জন্য যে পরিমাণ জমি বা ফসলের দরকার তা থেকে অতিরিক্ত জমি বা ফসলের মূল্য অথবা যে কোনো একটির মূল্য যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মূল্যের সমান হয়। তাহলেও কুরবানি ওয়াজিব।
৩. পরিবারের সব সদস্যের যদি আলাদা-আলাদাভাবে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়, তবে সবার ওপর আলাদাভাবেই কুরবানি ওয়াজিব।
৪. গরিব ব্যক্তি যদি কুরবানির নিয়্যাতে গরুক ক্রয় করে তবে তার ওপরও কুরবানি ওয়াজিব।
৫. উদ্দেশ্য হাসিলে কুরবানির মান্নত করলে সে উদ্দেশ্য পূর্ণ হলেও কুরবানি করা ওয়াজিব।
৬. নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যত সম্পদের অধিকারী হোক না কেন তার ওপর একটি কুরবানিই ওয়াজিব। সম্পদ বেশি বলে একাধিক কুরবানি করতে হবে এমন কোনো বিধান নেই। অবশ্য একাধিক কুরবানি করলে অনেক ছাওয়াব লাভ হয়।
এক কথায় যে অবস্থায়, যার ওপর সাদাকায়ে ফিতর ওয়াজিব, সে অবস্থায় ঐ ব্যক্তির ওপর কুরবানিও ওয়াজিব। অতএব প্রত্যেক স্বাধীন, ধনী, প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্ক নর-নারীর উপর কুরবানি ওয়াজিব।